Header Ad

আসসালামু আলাইকুম! Sathi Vai তে আপনাকে স্বাগতম।
Type Here to Get Search Results !

ইমাম আবূ হানীফার অসিয়ত-১



ইমাম আবূ হানীফা রহ. ছাত্র ইমাম আবূ ইউসূফ রহ. (মৃত-১৮২টি) কে যে অসিয়ত করেছিলেন তা নিম্নরূপ, ইমাম আবূ হানীফা রহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন, যারা তোমার কাছে ফিকাহ অর্জন করতে ইচ্ছুক; তাদের দিকে পূর্ণ মনোযোগী হবে। তাদের প্রত্যেককে তোমার ঔরসজাত ছেলে সন্তান মনে করবে। আর তোমার আন্তরিকতা তাদের ইলমের আগ্রহকে বাড়িয়ে দিবে। ইমাম আবূ হানীফা রহমাতুল্লাহি আলায়হি ইমাম আবূ ইউসুফ রহমাতুল্লাহ আলায়হিকে উদ্দেশ্য করে বললেন, হে আবূ ইউসুফ! তুমি আমার অসিয়তগুলোর ওপর পরিপূর্ণভাবে আমল করবে। আর এগুলো প্রত্যেক ব্যক্তির জন্যই জরুরী। আল্লাহর কাছে আশা করা যায়, তা ইহকাল পরকালে কাজে আসবে। বর্ণিত আছে, যখন ইমাম আবূ হানীফা রহমাতুল্লাহি আলায়হি তাঁর প্রিয় ছাত্র ইমাম আবূ ইউসুফ রহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর মাঝে হেদায়াত, চারিত্রিক মাধুর্যতা ইলমের পিপাসা নিবারণে মনোযোগী হওয়ার মতো অসাধারণ গুণাবলি লক্ষ্য করলেন, তখন ইমাম আবূ ইউসুফ রহমাতুল্লাহি আলায়হিকে বিশেষ অসিয়ত করতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন,

 

অসিয়ত-১. হে ইয়াবা (হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ আলায়হি-এর নাম) রাষ্ট্র প্রধানকে সমীহ করবে। তাঁর বিশেষ মর্যাদার প্রতি পূর্ণ লক্ষ্য রাখবে। আর কখনো তাঁর সামনে মিথ্যা বলতে যাবে না। (বর্তমানে এটা মসজিদ মাদরাসার কমিটির ক্ষেত্রেও আমলে আসতে পারো)

অসিয়ত ২। রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে বেশি আসা যাওয়া করবে না। একান্ত ইলমী প্রয়োজন হলেই তখন যাবে। কারণ যখন তুমি তার কাছে বেশি বেশি আসা-যাওয়া করবে, তখন জনসাধারণ তোমাকে নিচু মনে করতে শুরু করবে। আর রাষ্ট্র প্রধানের কাছেও তুমি নিচু হয়ে পড়বে। অতএব তার সংশ্রবকে আগুনের মতো মনে করবে। যেমন তুমি আগুন দ্বারা প্রয়োজন পূর্ণ করার সাথে সাথে আবার আগুন থেকে দূরে থাকো এবং কাছেও যাও না। কারণ নিকটবর্তী হলে সে তোমাকে পুড়ে ভস্ম করে দিবে। আর তার কারণ হচ্ছে, বাদশাহ বা শাসকরা সাধারণতঃ নিজের সম্পর্কে যে মান মর্যাদা পোষণ করেন, তা অন্যের জন্য হওয়াটা সহ্য করেন না

(বর্তমান সময়ে মাদরাসার শিক্ষক হলে মাদরাসার কমিটি আর ইমাম হলে মসজিদ কমিটির বিশেষ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ইমাম আবূ হানীফা রং-এর অসিয়তের ওপর পরিপূর্ণভাবে আমল করা উচিত।)

অসিয়ত-

রাষ্ট্রপ্রধানের সামনে বেশি কথা বলা পরিহার করবে। কারণ সে তোমার কথা যাচাই করার চেষ্টা করবে, যাতে সে তার পরিষদবর্গকে বলতে পারে যে, আমি তার থেকে অধিক জ্ঞানী। তোমার কথায় ভুল-ত্রুটি ধরবে। আর এভাবেই তুমি তাঁর দরবারে অপমানিত হবে

অসিয়ত-

যখন তুমি বাদশাহ বা রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে যাবে, তখন নিজ মর্যাদা সম্মানের ব্যাপারে সতর্ক থাকবে এবং সেই সাথে অন্যের মর্যাদার প্রতিও লক্ষ্য রাখবে

অসিয়ত-

 বাদশাহর কাছে এমন সময় যাবে না, যখন কোনো আহলে ইলম তাঁর কাছে উপস্থিত থাকে, যার সম্পর্কে তুমি অবগত নও। কারণ, যদি তুমি তার থেকে ইলমের পরিপক্কতায় কম হয়ে থাকো আর তাঁর সম্পর্কে পূর্ণ অবগত না হয়ে আগে বেড়ে কথা বলতে যাও, তাহলে সে তোমার ক্ষতি করতে পারে। আর যদি তুমি তার থেকে বেশি জ্ঞানী হও, জানা না থাকায় তুমি তার সামনে সংকোচভাব দেখাও, তখন তোমার অবস্থান বাদশাহর দৃষ্টিতে হীন হয়ে যাবে

 

অসিয়ত-

যখন বাদশাহ কোনো সরকারী কাজ তোমার উপর ন্য করতে চায়, তখন তা গ্রহণ করবে না। হ্যাঁ, যখন তোমার দৃঢ় আস্থা হবে। যে তিনি তোমার, তোমার ইলম বিচার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের প্রতি সন্তুষ্ট এবং রায় দেয়ার ক্ষেত্রে অন্যের মতে রায় দিতে না হয় তখন তুমি সে কাজ গ্রহণ। করতে পারো

অসিয়ত-

 বাদশাহর বন্ধু-বান্ধব সদস্যবর্গের সঙ্গে সম্পর্ক করো না। ঘনিষ্ঠতা যা হবে, তা যেনো বাদশাহর সাথে হয়

অসিয়ত ৮।

 বাদশাহর দোস্ত আহবাব এবং তার সদস্যবর্গের থেকে দূরে থাকবে। এতে তোমার মর্যাদা সম্মান বজায় থাকবে। অসিয়ত ৯।

 সাধারণ মানুষের সামনে শুধু বিষয়ে কথা বলবে, যে সম্পর্কে তোমাকে প্রশ্ন করা হয়

অসিয়ত ১০।

দুনিয়া ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে সাধারণ মানুষের সামনে আলোচনা করবে না; বরং শুধু ইলম সম্পর্কিত বিষয়ে তাদের সামনে আলোচনা করবে। যাতে তাদের ধারণা না হয়ে যায় যে, ধন-দৌলতের প্রতি তোমার দুর্বলতা রয়েছে। যদি তাদের অন্তরে চিন্তা জাগ্রত হয়, তখন তোমার সম্পর্কে তারা খারাপ ধারণা পোষণ করবে এবং মনে করবে, ঘুষের প্রতি তোমার দুর্বলতা রয়েছে এবং তুমি তা গ্রহণ করতে প্রস্তুত

অসিয়ত ১১

 সাধারণ মানুষের সামনে হাসি-ঠাট্টা করবে না

অসিয়ত ১২।

 বাজারে বেশি আসা যাওয়া করবে না।

অসিয়ত ১৩।

যে সব ছেলে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার কাছাকাছি তাদের সঙ্গে কথা বলবে না। কারণ তারা ফিতনা স্বরূপ। তবে ছোট বাচ্চাদের সাথে কথা বলা তাদের মাথায় হাত বুলানোতে কোনো ক্ষতি নেই

অসিয়ত ১৪।

সাধারণ মানুষের মাঝে বৃদ্ধ লোকদের সাথে কখনো রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটবে না। কারণ যদি তুমি বৃদ্ধকে আগে বাড়িয়ে নাও, তখন বুদ্ধের তুলনায় তোমার ইলমের মর্যাদা কমানো হল। আর যদি তুমি তাঁকে পিছনে ফেলে সামনে চলে যাও, তখন তাদের কাছে তোমার সাদা কমতে থাকবে। কারণ বৃদ্ধকে সম্মান না করা নবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদেশ বিরোধী। রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

বলেছেন, ' যে ব্যক্তি বৃদ্ধকে সম্মান করে না এবং ছোটদের স্নেহ করে না, সে আমার (আদর্শ) উম্মত হিসেবে গণ্য হবে না।'

অসিয়ত ১৫।

রাস্তায় কখনো বসবে না। কিন্তু যদি (ঘর বাড়ি ছাড়া কোথাও) বসার প্রয়োজন হয়, তখন মসজিদে গিয়ে বসবে।

অসিয়ত ১৬।

কোনো দোকানের সামনে কখনো বসবে না।

অসিয়ত ১৭।

বাজারে বা মসজিদের ভিতর বসে যাবে না (হ্যা, যদি বিশেষ প্রয়োজন হয়, তাহলে ভিন্ন কথা )

অসিয়ত ১৮।

যে সব জায়গায় পানি পান করার ব্যবস্থা রয়েছে, থেকে এবং যারা পানি পান করায় তাদের হাত থেকে পানি পান করবে না। (কারণ ধরনের জায়গাতে সব শ্রেণীর লোক আসা-যাওয়া করে এক তাদের অধিকাংশই আহলে ইলমের মর্যাদা বুঝে না। আর যারা পানি পান করায়, তারাও এক গ্লাসেই সবাইকে পানি দেয়, তাই এক্ষেত্রে আলেম গায়রে আলেমের মাঝে কোনো পার্থক্য করে না।)

অসিয়ত ১৯।

 দীবাজ (এক প্রকার রেশমী বজ্র), অলংকার কোনো ধরনের রেশমি কাপড় পরিধান করবে না। কারণ এর দ্বারা তোমার মাঝে অহংকার সৃষ্টি হতে পারে

অসিয়ত ২০।

 শয়ন কক্ষে শায়িত অবস্থায় স্ত্রীর সাথে অতিরিক্ত কথা বলবে না। তবে বিশেষ প্রয়োজনের মুহুর্তে বেশি কথা বলার দরকার হলে তখন বলবে